On March 10, 2015 a teenage girl of a hapless Hindu refugee who fled Muslim-majority Bangladesh for security in Hindu-majority India was gang raped, in Nadia District of Hindu-majority West Bengal. This was reported on a sideline by Anandabazar Patrika of Calcutta.
Two days later, a short distance from the first crime a 71-year old Christian nun was raped by a criminal after robbing a Christian Convent of money, computer and valuables. Eight individuals were arrested, but not charged as of March 17, 2015.
On March 16, 2015 the militant Chief Minister of West Bengal Miss Mamata Banerjee visited the convent and demonstrators blocked her convoy as well as the National Highway 14 as reported by the same Anandabazar Patrika.
No one was arrested for the gang rape of Hindu teen. There were no demonstration to protest her rape.
AnandaBazar Patrika Calcutta March 11, 2015
এ পারে
আক্রান্ত ছিন্নমূল পরিবার
সুস্মিত হালদার
হাঁসখালি, ১১ মার্চ , ২০১৫, ০১:০৪:১৭
একটু নিরাপত্তার আশায় জন্মভূমি
ছেড়ে রাতের অন্ধকারে কাঁটাতারের বেড়া পার হয়ে ভারতে এসে আশ্রয় নিয়েছিল পরিবারটি। বোঝেননি, এ
পারেও অত্যাচারের শিকার হতে হবে তাঁদের কিশোরী মেয়েকে। চার মদ্যপ যুবকের হাতে যৌন
নির্যাতনের জেরে মেয়েকে সংজ্ঞাহীন হতে দেখলেন অসহায় বাবা-মা। এর প্রতিকার করতে ভরা
বাজারে সালিশি সভা বসল। জরিমানাও করা হল চার অভিযুক্তকে। কিন্তু তার পরও
অভিযুক্তদের পরিবার এবং গ্রামবাসীদের একাংশের হুমকি চলছেই। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে
ছিন্নমূল পরিবারটি। এই পরিস্থিতিতে কিশোরীর মায়ের প্রশ্ন, “কোথায় গেলে নিরাপত্তা পাব বলতে পারেন?”
সালিশি সভায় উপস্থিত ছিলেন নানা দলের নেতারা। মামজোয়ান গ্রাম পঞ্চায়েতে
তৃণমূল সদস্য শুভেন্দু সরকার উপস্থিত ছিলেন বলে জানিয়েছেন। বাজার কমিটির সভাপতি
তথা তৃণমূল নেতা সুভাষ হালদার, কংগ্রেস
নেতা সুহাস বন্দ্যোপাধ্যায় সালিশিতে থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, ছিন্নমূল পরিবারটির বৈধ নাগরিকত্ব না থাকায় পুলিশের কাছে গেলে বিপদে পড়তে
পারে বলেই তাঁরা সালিশি করে বিষয়টি মেটাতে চেয়েছিলেন। তবে
জরিমানার সিদ্ধান্ত তাঁদের নয়, দাবি
করছেন ওই নেতারা। মামজোয়ান গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, গ্রামের একেবারে শেষ সীমানায় বাড়ি ওই হিন্দু পরিবারের। কিশোরীর মা জানান, হোলির দিন দুপুরে হঠাত্ বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ে গ্রামেরই চার মদ্যপ যুবক।
প্রথমে তারা কিশোরীর মাকে জোর করে রং মাখায়। বিপদ বুঝতে পেরে কিশোরী ঘরের ভিতরে
ঢুকতে গেলে ওই যুবকরা তাকে জোর করে ঘরের ভিতরে নিয়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। মেয়ের বিপদ বুঝতে পেরে বাধা দিতে গেলে মারধর করা হয় কিশোরীর বাবা-মাকে। প্রায়
মিনিট পনেরো এ ভাবেই চলে অত্যাচার, দাবি
ওই কিশোরী ও তার পরিবারের।
তাদের চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। তাঁদের দেখে বেরিয়ে আসে অভিযুক্তরা। মদ্যপ চার যুবকের এক জন রামদা নিয়ে কিশোরীর
পরিবারের লোকদের তাড়া করে। ভয়ে তাঁরা বাড়ির পিছনের মাঠ দিয়ে ছুটে পাশের পীরপুর
গ্রামে হাজির হন। সেখানে যন্ত্রণায় অজ্ঞান
হয়ে যায় ওই কিশোরী। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় গ্রামীণ চিকিত্সকের কাছে। তিনি তাকে বগুলা
গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। বগুলার
হাসপাতাল থেকে ফের শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিত্সার পরে তাকে
বৃহস্পতিবার রাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। যদিও সে পুরোপুরি সুস্থ নয়।
শুক্রবার দুপুরে শুরু হয় হুমকি। কিশোরীর পরিবার যাতে পুলিশের কাছে অভিযোগ
না করে, তার জন্য ক্রমশ চাপ দেওয়া হতে
থাকে। তবু
ওই
কিশোরীর বাবা মামজোয়ান বাজারে গিয়ে ঘনিষ্ঠদের কাছে বিষয়টি জানান। সেখানে কোনও ভরসা
না পেয়ে শেষ
পর্যন্ত পুলিশের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ওই পরিবার। সেই মতো শনিবার সকালে
হাঁসখালি থানায় যাওয়ার জন্য বের হন কিশোরী ও তার মা। কিন্তু অভিযুক্ত যুবকদের পরিবার এসে বাধা দেয়। অভিযুক্তরাই বাজারের লোকজনের কাছে আবেদন করেন, বিষয়টি
আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে দেওয়ার। বাজারের পাশেই একটা আমবাগানে ওই কিশোরীর পরিবার ও
অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সালিশি সভা বসে।
সালিশি সভায় নিদান দেওয়া হয়, টাকা
নিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে হবে কিশোরীর পরিবারকে। থানায় নালিশ করা চলবে না। কিছু
দরাদরির পর ঠিক হয়, চার
অভিযুক্তের পরিবার দেড় লক্ষ টাকা দেবে। তখনই ৬০ হাজার টাকা অভিযুক্তদের কাছ থেকে
নিয়ে তা রেখে দেওয়া হয় গ্রামেরই এক ব্যক্তির কাছে। বাকি টাকা ১৭ মার্চের মধ্যে মেটাতে বলা হয়।
তখনকার মতো এই ফয়সালা হলেও, রবিবার
চার অভিযুক্ত যুবকের এক জন বাড়িতে কীটনাশক খায়। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে সোমবার সকালে তার মৃত্যু হয়। কিশোরীর পরিবারের
দাবি, তার পরেই কিশোরীর পরিবারকে দায়ী করে ফের হুমকি দিতে শুরু করে অভিযুক্তরা। মৃত যুবকের বাবার অভিযোগ, মিথ্যা অপবাদ এবং টাকার জন্য চাপ সহ্য করতে না পেরেই তাদের ছেলে আত্মহত্যা
করেছে।
সালিশি সভায় উপস্থিত মাতব্বররা অবশ্য দাবি করছেন, অভিযুক্তরাই টাকা দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে চেয়েছিলেন। মামজোয়ান গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য শুভেন্দুবাবু বলেন, “আমি কাউকে টাকা দেওয়ার কথা বলিনি। ওরা নিজেরাই আলোচনা করে ঠিক করেছিল।’’
মামজোয়ান বাজার কমিটির সভাপতি সুভাষবাবু বলেন, “ওরাই আমাদের কাছে এসে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করে দেওয়ার কথা
বলেছিল। টাকার
কথা ওরা নিজেরাই ঠিক করেছিল।” তাঁর দাবি, গ্রামগঞ্জে
এমন অনেক “ছেটোখাট” ঘটনা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে মিটিয়ে দেওয়া হয়। একই কথা বলেন সালিশি সভায় উপস্থিত কংগ্রেস নেতা সুহাস বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর
বক্তব্য, “আমরা
চেয়েছিলাম যে মেয়েটা যেন সুবিচার পায়। ওরা
বাংলাদেশী। বিষয়টি প্রশাসনের কাছে গেলে ওরাও বিপদে পড়ে যেতে পারত।” তাঁর দাবি, মৃত যুবকটি অনুশোচনায় আত্মঘাতী হয়েছে, টাকার চাপের জন্য নয়।
তবে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসায় সালিশি সভার মাতব্বররা এখন দূরত্ব তৈরি করছেন। তাঁদের বক্তব্য, “আমরা
আর এর মধ্যে নেই। আইনের সাহায্য নিক ওই পরিবার। আমরা ওদের সঙ্গে থাকব।” ঘটনার কথা
শুনে নদিয়ার সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “অবৈধ
ভাবে কেউ এসে থাকলেও, তাঁদের
উপর অত্যাচার ঘটলে পুলিশ অবশ্যই দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।” তবে অবৈধ ভাবে
বসবাসের জন্য পুলিশকে ওই পরিবারের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে, জানান তিনি।
সব শুনে কিশোরীর পরিবারের বক্তব্য, “এখন ভাবছি, বাংলাদেশেই
আমরা নিরাপদ ছিলাম।’’
Anandabazar
Patrika Calcutta March 17, 2015
রাস্তা
রুখল রানাঘাট
বিক্ষোভ-স্লোগানে
অবরুদ্ধ মমতার কনভয়
বিতান ভট্টাচার্য ও সৌমিত্র সিকদার
রানাঘাট, ১৭ মার্চ , ২০১৫, ০৩:১০:১৭
৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে তখন আটকে
পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। সোমবার সুদীপ ভট্টাচার্যের তোলা ছবি।
গাংনাপুরের কনভেন্ট স্কুলে ডাকাতি ও বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনীর ধর্ষণের ঘটনার ৪৮
ঘণ্টা পরেও গ্রেফতার হয়নি কোনও দুষ্কৃতী। এ নিয়ে স্থানীয় মানুষের ক্ষোভের আঁচ
সোমবার ছুঁয়ে গেল খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। আক্রান্ত স্কুল এবং
রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সন্ন্যাসিনীকে দেখে সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ
কলকাতা ফেরার পথে মিশন গেট এলাকায় উত্তেজিত জনতার অবরোধে আটকে পড়ল মুখ্যমন্ত্রীর
কনভয়।
স্কুলের চার জন পড়ুয়ার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আলাদা করে কথা বললেও সমস্যা
মেটেনি। উল্টে জমায়েত থেকে আচমকা উড়ে আসে ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান। পুলিশ ভিড় সরানোর
চেষ্টা শুরু করলে অবরোধকারীরা বসে পড়েন রাস্তায়। এ বার মুখ্যমন্ত্রী মাইক টেনে
নিয়ে অভিযোগ করেন, ছাত্রছাত্রীদের
ভিড়ের মধ্যে মিশে বিজেপি এবং সিপিএম গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছে। চ্যালেঞ্জ ছুড়ে
তিনি বলেন, যত
ক্ষণ অবরোধ চলে চলুক। তিনিও নড়বেন না। ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরে প্রায় এক ঘণ্টা
গাড়িতেই বসে থাকেন মমতা।
তার পর হঠাৎই খবর রটে রাস্তার লাগোয়া চেতনা মাঠে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের
অভিযোগ শুনবেন মুখ্যমন্ত্রী। জনতা রাস্তা ছেড়ে ভিড় করতে থাকে মাঠে। ভিড় একটু
হাল্কা হতেই পুলিশ তড়িঘড়ি মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় রওনা করিয়ে দেয়।
মুখ্যমন্ত্রী চলে যাওয়ার পরে ফের শুরু হয় অবরোধ। এ বার জাতীয় সড়কের সঙ্গে
সঙ্গে শিয়ালদহ-রানাঘাট শাখার রেল লাইনেও। জেলার আনাচ-কানাচে ছড়িয়ে পড়ে বিক্ষিপ্ত
উত্তেজনা। শেষ পর্যন্ত রাত পৌনে দশটা নাগাদ অবরোধ উঠে যায়। যদিও ক্ষোভ মেটেনি
গাংনাপুরের। এ দিনের জমায়েত থেকে দাবি উঠেছে, তদন্তের ভার সিবিআই-কে দিতে হবে।
শুক্রবার রাতের ঘটনার পরে সোমবার রাত পর্যন্ত কোনও দুষ্কৃতীকেই গ্রেফতার
করতে পারেনি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়া রাজ্য পুলিশের অধীনস্থ সিআইডি। তাদের তরফে
অগ্রগতি বলতে সিসিটিভির ফুটেজ থেকে চার দুষ্কৃতীর ছবি ও বাকি তিন দুষ্কৃতীর স্কেচ
প্রকাশ করা। এ ছাড়া, স্থানীয়
জনা দশেক সন্দেহভাজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ। রাজ্য পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল
জিএমপি রেড্ডি এ দিন ঘটনাস্থল ঘুরে শুধু বলেন, ‘তদন্ত চলছে’।
অথচ ঘটনার পরের দিন, অর্থাৎ
শনিবার সকালে বিক্ষোভরত ছাত্র ও স্থানীয়দের পুলিশ আশ্বাস দেয়, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করা হবে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার
অভিযোগ তুলে সে দিনও জাতীয় সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করা হয়েছিল। পুলিশের আশ্বাস পেয়ে
সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পরে ওঠে সেই অবরোধ।
কিন্তু পুলিশ কথা রাখতে না-পারায় ফের ক্ষোভ ছড়ায় গাংনাপুরে। ইতিমধ্যে খবর
আসে মুখ্যমন্ত্রী আসছেন। সে কথা শুনে এ দিন দুপুর থেকেই স্কুল চত্বরে ভিড় করেছিল
পড়ুয়ারা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন স্কুলের প্রাক্তনীরাও। কথা ছিল, মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে রেখেই মোমবাতি মিছিল করবেন তাঁরা। কিন্তু বিকেল ৫টা
বেজে গেলেও মুখ্যমন্ত্রীর দেখা মেলেনি। ফলে মিছিল শুরু হয়ে যায়। তাতে একে একে এসে
মেশে আশপাশের তাহেরপুর, বীরনগর, বাদকুল্লার বাসিন্দাদের দীর্ঘ মিছিল। স্কুলপড়ুয়া থেকে বয়স্ক মানুষ কারও
প্ল্যাকার্ডে লেখা ‘উই ওয়ন্ট জাস্টিস’, কারও
প্ল্যাকার্ডে আবার লেখা ‘অকর্মা পুলিশ’।
পথে প্রতিবাদে। রানাঘাটের ধর্ষণের ঘটনায় পার্ক স্ট্রিটে বিক্ষোভ মিছিল।
সোমবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
তত ক্ষণে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী
পৌঁছে গিয়েছেন ওই স্কুলে। বিকেল ৫টা ২৫ নাগাদ ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপরেই কনভয়
থামিয়ে স্কুলে ঢুকে পড়েন তিনি। রাস্তায় তখন জমাট ভিড়। সেখান থেকে উড়ে আসে ‘গো
ব্যাক’ স্লোগান। মিনিট পাঁচেক স্কুলে কাটিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পায়ে হেঁটেই রওনা দেন
দেড় কিলোমিটার দূরের রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালের দিকে। তত ক্ষণে যানজটে স্তব্ধ হয়ে
গিয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক। তার মধ্যেই কখনও থমকে কখনও ভিড় করা জনতাকে মৃদু ধমক
দিয়ে হাঁটতে থাকেন মমতা।
হাসপাতালে মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন মিনিট কুড়ি। হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়েই ঘোষণা
করেন, “সিস্টার ইজ অলরাইট নাউ।... কয়েক জন
অ্যারেস্ট হয়েছে। পুরো গ্যাংটা ধরার চেষ্টা চলছে। স্ট্রং অ্যাকশন নেওয়া হবে।” তবে
মুখ্যমন্ত্রী বললেও কোনও দুষ্কৃতীর গ্রেফতার হওয়ার খবর রাত পর্যন্ত নেই। উল্টে
সিআইডির একটি সূত্রের খবর, ডাকাত
দলের অন্তত তিন জন সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ফলে মুখ্যমন্ত্রীর
মন্তব্য শুনে ভ্রূ কুঁচকে যায় সেখানে ভিড় করে থাকা জনতার। ফের স্লোগান উড়ে আসে ‘গো
ব্যাক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়’।
জাতীয় সড়ক জুড়ে ভিড় ছিলই। কিন্তু মহকুমা হাসপাতাল থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে, স্কুলের কাছাকাছি মিশন গেট এলাকায় এসে আটকে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়। সামনে
স্কুলপড়ুয়া ও জনতার অবরোধ। প্রায় দশ মিনিট আটকে থাকার পরে পিছনের গাড়িতে থাকা
ডিজি-কে ডেকে পাঠান মমতা। নির্দেশ দেন চার জন পড়ুয়াকে ডেকে নেওয়ার। তাদের সঙ্গে
কথা বলবেন তিনি। মিনিট কয়েকের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির জানলার সামনে ভিড় করে
জনা কয়েক পড়ুয়া। মুখ্যমন্ত্রীকে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার কথা বলে তারা। জানায়, বারো কিলোমিটার দূরের গাংনাপুর থানা থেকে পুলিশ ওই দিকে প্রায় আসেই না।
একের পর এক চুরি-ডাকাতির ঘটনা হলেও সাকুল্যে পঞ্চাশ মিটার দূরের রানাঘাট থানা মুখ
ঘুরিয়ে বসে থাকে। পড়ুয়ারা আরও দাবি জানায়, মুখ্যমন্ত্রী
পাশের মাঠে চলুন। সেখানে দাবিদাওয়া নিয়ে তাদের আরও কিছু বলার আছে।
ইতিমধ্যে অবরোধকারী জনতাকে সরাতে অনুরোধের পথ ছেড়ে জোর করতে শুরু করে
পুলিশ। তাতে আরও তেতে ওঠে এলাকা। এই সময়ে পুলিশের মাইক টেনে নিয়ে রীতিমতো ক্ষুব্ধ
মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, “আমি
সরি। আমাদের বিরোধী দলের কয়েক জন লোক আছেন যারা এই নুইসেন্স তৈরি করার চেষ্টা
করছেন। তাঁরা চান না, আসল
দুষ্কৃতীরা ধরা পড়ুক। আমরা আসল দুষ্কৃতীকে ধরব। তাদের বিরুদ্ধে স্ট্রং অ্যাকশন
হবে। আমি এটাও বলব, এমন
কিছু করবেন না যাতে ঘটনাটি কলঙ্কিত করা হয়। মিশনারি সব সময়ে শান্তির প্রতীক। আমি
দেখছি, চার-পাঁচ জনকে এখানে, যারা রাজনৈতিক দলের রঙ দিয়ে ঘটনাটিকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা করছেন।”
মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনেও জনতা নড়েনি। এই সময়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ফের বলতে শোনা
যায়, “আমাকে এ ভাবে আটকে রেখে লাভ নেই।
আমি রইলাম। কত ক্ষণ করতে পারেন করুন। দেখি, কত
ক্ষণ করতে পারেন অসভ্যতামি। বিজেপি আর সিপিএম পার্টিকে বলুন কত ক্ষণ বুকের পাটা
আছে! সিপিএম আর বিজেপিকে আমি চ্যালেঞ্জ করছি। আমি আন্দোলনের লোক। আমি আপনাদের ডরাই
না। আমি এখানে অপেক্ষা করছি। মারার ক্ষমতা থাকলে আসবেন। গায়ে হাত দেবেন। অপেক্ষা
করছি এখানে।”
পরিস্থিতি ক্রমেই ঘোরালো হয়ে উঠতে থাকে। ‘গো ব্যাক’ স্লোগানের সঙ্গেই এ বার
‘মমতা ব্যানার্জি জিন্দাবাদ’ও ভেসে আসতে থাকে। খ্রিস্টান ধর্মের কিছু নেতাও জনতাকে
বোঝাতে চেষ্টা করেন। তাতে লাভ হয়নি। মিনিট পঁচিশ এ ভাবেই চলার পরে আচমকাই রটে যায়, পাশের চেতনা মাঠে গিয়ে ক্ষুব্ধ জনতার কথা শুনবেন মমতা। ভিড় এ বার পাতলা হতে
থাকে। মাঠের দিকে হাঁটতে থাকে জনতা। আর সেই অবসরে পুলিশ বের করে দেয় মুখ্যমন্ত্রীর
কনভয়।
তবে মমতা বেরিয়ে গেলেও অবরোধ ওঠেনি। অবরোধকারীদের অনেককেই বলতে শোনা যায়, “উনি নিজেকে আন্দোলনের লোক বলছেন। আমরা তো আন্দোলনই করছিলাম!” কারও ক্ষোভ, “মুখ্যমন্ত্রীর পুলিশই এ দিন আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে বাধা দিল।”
তৃণমূলের দাবি, এ
দিনের ভিড়ে পড়ুয়া ছাড়াও বেশ কিছু রাজনৈতিক মুখ দেখা গিয়েছে। তারাই ছাত্রছাত্রী, প্রাক্তনীদের ভিড়ে মিশে দল ভারী করেছে। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে পড়ুয়াদের
উস্কেছে। তবে পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে পাল্টা দায়ী করেছেন এ রাজ্যে বিজেপির
কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী প্রকৃত দুষ্কৃতীদের ধরার বদলে বিজেপিকে দুষছেন। এর ফলে
বিজেপিকে নিয়ে ওঁর অস্বস্তিটাই প্রমাণ হয়। বিজেপিকে দোষী করে উনি নিজের সরকারের
ত্রুটি ঢাকতে পারেন না। দোষীদের ধরার যে দাবি ছাত্রছাত্রীরা তুলেছিল, তা
অসঙ্গত ছিল না।” এ দিন সন্ধ্যায় পায়রাডাঙা এবং রানাঘাটে তাদের দু’টি কার্যালয়ে
তৃণমূল সমর্থকেরা ভাঙচুর চালিয়েছে বলে বিজেপি-র অভিযোগ।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “উনি (মুখ্যমন্ত্রী) গিয়ে সমাধানের বদলে ভাষণ দিয়ে সমস্যা আরও জটিল করে ফিরে
এলেন। এই ক্ষোভ এর পরে আর শুধু রানাঘাটে সীমাবদ্ধ থাকবে না।”
কলকাতার আর্চবিশপ টমাস ডি সুজার দাবি, “ঘটনাটি এতটাই খারাপ উদাহরণ তৈরি করেছে যে, পড়ুয়ারা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। এই ঘটনায় যে অভিযুক্তেরা বাইরে ঘুরে
বেড়াচ্ছে, আমরা
চাই, তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক।”
তিনি জানান, প্রশাসনের
উপর এখনও তাঁর আস্থা রয়েছে। তবে একই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “এ কথা অবশ্য ঠিক যে পুলিশ-প্রশাসন সময় মতো ব্যবস্থা নিলে এই ঘটনাটি হয়তো
এড়ানো যেত।”
Anandabazar Patrika Calcutta March 17, 2015
শহরে জোড়া
ধর্ষণ, শিকার বালিকা ও মনোরোগী
নিজস্ব সংবাদদাতা
১৭ মার্চ , ২০১৫, ০২:৪৬:১৩
রানাঘাটের বৃদ্ধা সন্ন্যাসিনীকে ধর্ষণের ঘটনা নিয়ে যখন গোটা দেশ উত্তাল, তখনই ফের এ শহরে পরপর দু’টি গণধর্ষণের অভিযোগ। একটিতে লেকটাউনে আক্রান্ত এক
‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ তরুণী এবং অন্য ঘটনায় কসবার আনন্দপুরে এক কিশোরী। লেকটাউনের
ঘটনায় কেউ গ্রেফতার না হলেও, আনন্দপুরের
ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রোহিত দাস ওরফে শম্ভুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
লেকটাউনে গত ৯ মার্চের ওই ঘটনায় অভিযোগ, পরদিন ওই তরুণী দু-দু’বার থানায় জানাতে গেলেও তাঁর অভিযোগ না নিয়ে উল্টে
সেখানে তাঁকে নানা ভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। শেষ পর্যন্ত সোমবার সল্টলেকের
এডিসিপি-র অফিসে গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই তরুণী। তার ভিত্তিতে এক জনকে আটক
করলেও মূল অভিযুক্ত গুলশন কুমারকে এখনও খুঁজে পায়নি পুলিশ।
লেকটাউনের গ্রিন পার্কের বাসিন্দা ওই তরুণীর পরিবার পুলিশকে অভিযোগে
জানিয়েছে, গুলশন
ও তার তিন বন্ধু মেয়েটির বাড়ির খুব কাছেই মেসে থাকত। সেই সুবাদে ওই যুবকদের সঙ্গে
পরিচয় ছিল তরুণীর। সেই পরিচয়ের সূত্রেই গুলশন ওই তরুণীকে ফোন করে জানায়, তাঁর কিছু ছবি তাদের কাছে আছে। তিনি তাদের মেসে গিয়ে দেখা না করলে ছবিগুলি
ইন্টারনেটের পর্নো সাইটে দেওয়া হবে। ওই তরুণী পুলিশকে জানান, ভয় পেয়ে গুলশনদের মেসে যান তিনি। অভিযোগ, সেখানে গুলশনদের দেওয়া পানীয় খেয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে পরপর ধর্ষণ
করে ওই যুবকেরা।
ওই তরুণীর দাবি, লেকটাউন
থানা প্রথমে তাঁর অভিযোগ নেয়নি। যদিও ওই থানার এক অফিসারের দাবি, তরুণী অভিযোগ করার আগে তাঁর দাদা থানায় এসে লিখিত ভাবে জানিয়ে গিয়েছেন, তাঁর বোন কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। চিকিৎসার জন্য পাভলভে ভর্তিও ছিলেন।
এর আগেও তিনি এই ধরনের অভিযোগ করেছেন। থানার অফিসারেরা ওই তরুণীকে তাঁর দাদার লেখা
চিঠিটি দেখিয়েছেন বলেও ওই অফিসারের দাবি। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক তদন্তে ওই তরুণীর দাদার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তারা প্রমাণও
পেয়েছে। ওই তরুণীর কিছুদিন পাভলভ হাসপাতালে ভর্তি থাকার কথা জানা গিয়েছে বলেও
পুলিশের দাবি।
প্রশ্ন উঠেছে, মানসিক
ভারসাম্যহীনতার অজুহাতে কেন ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগ নেওয়া হবে না? তরুণীরও প্রশ্ন, “কেন
পুলিশ অভিযোগ পেয়েই সত্য-মিথ্যা যাচাই করতে তদন্ত করবে না?”
এই ঘটনায় লেকটাউন থানার নিষ্ক্রিয়তার প্রশ্নের পাশাপাশি পুলিশের বিরুদ্ধে
তোপ দেগেছেন তরুণীর দাদাও। সোমবার তিনি এডিসিপি-র অফিসে গিয়ে জানান, বোনের মানসিক ভারসাম্যহীনতার কথা বলে যে চিঠি লেকটাউন থানা দেখাচ্ছে, তা তিনি স্বেচ্ছায় লেখেননি। পুলিশ জোর করে লিখিয়েছে।
এ দিকে, অভিযুক্তদের
খোঁজে গিয়ে পুলিশ মূল অভিযুক্ত গুলশনকে না পেলেও এক জনকে আটক করেছে। পুলিশের দাবি, তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, পেশায়
ব্যবসায়ী গুলশন অসমের বাসিন্দা। বাকিরা কলেজে পড়ে।
বিধাননগর কমিশনারেটের এডিসিপি দেবাশিস ধর বলেন, “পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ যাচাই করা হচ্ছে। দোষ প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা
নেওয়া হবে। গুলশন ও অন্যদের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।”
অন্য দিকে, আত্মীয়ের
বাড়িতে বেড়াতে এসে গণধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছে বছর ষোলোর এক কিশোরী। ই এম
বাইপাস সংলগ্ন রুবি পার্কের বাসিন্দা ওই মেয়েটির পরিবারের অভিযোগ, শনিবার ওই কিশোরী পরিবারের সঙ্গে আনন্দপুরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে যায়। সেখানে
পৌঁছনোর পরে রোহিত দাস ওরফে শম্ভু নামে মেয়েটির এক বন্ধু তাকে ফোন করে দেখা করতে
বলে। শম্ভু কসবার বোসপুকুর এলাকার বাসিন্দা। মেয়েটি পুলিশকে জানিয়েছে, শম্ভু তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। তাই আত্মীয়ের বাড়িতে থাকাকালীন
দেখা করতে চেয়ে সে ফোন করে। ওই কিশোরীর অভিযোগ, ফোন পেয়ে দেখা করতে গেলে শম্ভু তাকে একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে ঠান্ডা
পানীয় খেতে দেয়। সেটি খাওয়ার পরেই সে অচৈতন্য হয়ে পড়ে। তখনই ওই যুবক তাকে ধর্ষণ
করে বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, ঘটনার
সময় ওই যুবকের সঙ্গে তার এক বন্ধুও ছিল। সে-ও মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। বাড়ি ফিরে এসে
ওই কিশোরী অসুস্থ হয়ে পড়লে এবং সকলকে পুরো ঘটনাটি জানালে পরিজনেরা থানায় শম্ভু ও
তার বন্ধুর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানায়। সোমবার শিশুকল্যাণ সমিতির কাছে ওই নাবালিকাকে
নেওয়া হলে মেয়েটিকে হোমে রাখার নির্দেশ দেয় সমিতি।
The Statesman Calcutta March 17, 2015
Woman gangraped in Kolkata
PTI |
Bhubaneswar,
17 March, 2015
image: http://www.thestatesman.com/cms/gall_content/2015/3/2015_3$largeimg17_Mar_2015_120202457.jpg
A 27-year-old woman
was allegedly gangraped by her neighbours in Lake town area of the city, police
said today.
The four accused also
threatened to upload her pictures on social media if she disclosed the
incident.
The alleged rape took
place on March 9 and the woman along with her brother filed an FIR with the
Lake Town police station under Bidhannagar police commissionerate yesterday,
they said.
In her complaint, the
woman said the four youths who brutalised her were her neighbours. After the
crime, they allegedly threatened her not to disclose it or the pictures would
be uploaded on the social networking sites, police said.
The police have launched a manhunt for
the youths, who are absconding.
Read more at
http://www.thestatesman.com/news/bengal/woman-gangraped-in-kolkata/52839.html#WKMTVsHsF5wB0m6B.99